ডিসেম্বরের মধ্যে বসবে পদ্মা সেতুর সব স্প্যান

Spread the love

বার্তাবহ চাঁদপুর নিউজ: করোনাভাইরাস মহামারিতে সাধারণ ছুটিতে দেশের প্রায় সব ক্ষেত্র থমকে গেলেও চলমান ছিল পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় সুরক্ষা নিয়ে সেতু তৈরির কাজ চালিয়ে গেছেন। বন্যার প্রভাবে পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে স্প্যান বসানোর কাজ বর্তমানে থমকে থাকলেও তারা আশা করছেন, শিগগির এই অবস্থা কেটে যাবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সব কটি স্প্যান বসানো শেষ করতে পারবেন তারা।

পদ্মা সেতুর মোট ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ইতিমধ্যে ৩১টি বসানো হয়েছে। চারটি স্প্যান বসানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে। পানির স্রোত কিছুটা কমলেই এগুলো বসানোর কাজ শুরু হবে।

এদিকে গতকাল এক ভার্চুয়ালি পর্যালোচনায় সভায় সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে বলেন, মূল সেতুর ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আর পুরো সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮১ ভাগের বেশি। বর্তমানে সেতুর ৪ হাজার ৬৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে।

প্রকল্প সংশ্লষ্টদের মতে, মহামারি পরিস্থিতি না থাকলে কাজের অগ্রগতি আরও কিছুটা বেশি হতো। বর্তমানে বন্যার কারণে স্প্যান বসানোর কাজ বন্ধ। তবে সেতু ও সেতুসংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলেছে। যে ৩১টি স্প্যান বসানো হয়েছে, সেখানে সড়ক ও রেলের স্ল্যাব স্থাপনের কাজ অর্ধেকের বেশি হয়ে গেছে।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৗশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান, বাকি ১০টি স্প্যানের মধ্যে ৪টি স্প্যান বসানোর জন্য প্রস্তুত রয়েছে। নদীর পানি কমলে এগুলো বসানো হবে। চলতি বছরের মধ্যেই শেষ হবে সবগুলো স্প্যান বসানোর কাজ।

গত বুধবার ঢাকা থেকে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি দল পদ্মা সেতু পরিদর্শনে যায়। বিশেষজ্ঞ দলটি সেতুর ৩২ নম্বর স্প্যান বসানোর ট্রায়েল করেছে। তাদের মতে, নদীর পানি কিছুটা কমলে স্প্যানটি বসানো যাবে। এ জন্য ৩২, ৩৩, ৩৪ ও ৩৫ নম্বর স্প্যান তৈরি রেখেছে সেতু কর্তৃপক্ষ। পর্যায়ক্রমে স্থাপন করা হবে এগুলো।

পুরো সেতু জুড়েই কাজ চলছে জানিয়ে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৗশলী (মূল সেতু) জানান, ‘রেলওয়ে স্লাব, রোডওয়ে স্লাব বসানো, ভায়াডাক্টের কাজ এগিয়ে চলছে। আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে এ মাসেই খুব শিগগির ৩২তম স্প্যান বাসনো হবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সব কটি স্প্যান বাসানোর কাজ শেষ হবে।’

এদিকে বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পদ্মা সেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড। কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের ৩০০ ফুটের বেশি জায়গা নদীভাঙনে পড়লে অনেক রোডওয়ে স্ল্যাব পানিতে তলিয়ে যায়। একই সঙ্গে স্লাব তৈরির কাজে ব্যবহৃত মেশিনপত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্রও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীতে চলে যাওয়া এসব জিনিসপত্র আর তুলে আনা সম্ভব হয়নি বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের থেকে জানানো হয়েছে।

তবে বিশাল জায়গা জুড়ে বিস্তৃত কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে কাজে সামান্য ব্যাঘাত ঘটলেও পরে কিছুটা দূরে ওই ইয়ার্ডের মধ্যেই পুনরায় চলছে স্লাবসহ প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কাজ।

গতকাল সরকারি বাসভবন থেকে পদ্মাসেতু প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনার ভার্চুয়াল সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, পদ্মা বহুমুখী মূল সেতুর কাজ ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। সেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮১ ভাগের বেশি হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, পদ্মাসেতুর ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ৩১টি বসানো হয়েছে। বর্তমানে সেতুর ৪ হাজার ৬৫০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে। ৪২টি পিয়ারের কাজ এরইমধ্যে শেষ হয়েছে এবং নদী শাসনের কাজ প্রায় ৮৪ ভাগ শেষ হয়েছে। মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে সংযোগ সড়ক ও টোল প্লাজার কাজও শেষ হয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা হতে মাওয়া এবং পাচ্চর হতে ভাঙ্গা পর্যন্ত দেশের প্রথম দৃষ্টিনন্দন এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ শেষ হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করবেন।

২০২১ সালের জুনের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করে যান চলাচলের জন্য সেতু খুলে দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করে রেখেছে সরকার। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। শুরু থেকে গত জুলাই পর্যন্ত ক্রমপুঞ্জিত ব্যয় হয়েছে ২৩ হাজার ৪২৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তে অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ শতভাগ শেষ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *