নারীর গৃহস্থালির সেবাকাজকে খাত হিসেবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে সরকার
বার্তাবহ চাঁদপুর নিউজ: দৈনন্দিন সংসারে নারীরা যে শ্রম দিয়ে থাকেন তা অদৃশ্য শ্রম নামেই পরিচিত। দেশের অর্থনীতিতে এ শ্রমের কোন মূল্যায়ন না থাকায় নারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন প্রাপ্য সম্মান থেকে। তাই নারীর এই অদৃশ্য শ্রমকে জাতীয় আয়ে অর্ন্তভুক্ত করা দরকার বলে মনে করেন গবেষকরা। তবে শিগগিরই একে খাত হিসেবে স্বীকৃতি দেবার কথা জানিয়েছে সরকার।
সেই কাকডাকা ভোরে সংসারের কাজে লেগে পড়েন খোদেজা বেগম। সারাদিন বিরামহীন চলতে থাকে তার কাজ। শহুরে কিংবা গ্রামীণ নারী-সবার ক্ষেত্রেই একই চিত্র। ছোট্ট একটু সংসারে কত যে কাজ তা বলেও যেন শেষ করা যাবে না।
২০১২ সালে পরিসংখ্যান ব্যুরোর সময় ব্যবহার জরিপ বলছে, কর্মজীবী নন এমন নারীরা ঘরের কাজে দিনে ৬ দশমিক ২ ঘন্টা সময় ব্যয় করেন। আর পুরুষরা মাত্র ১ দশমিক ২ ঘন্টা সময় ব্যয় করেন। অথচ নারীর অদৃশ্য এই শ্রমের ঠাঁই মেলে না অর্থনীতির হিসাবের খাতায়।
বেসরকারি সংস্থা সিপিডির এক গবেষণা বলছে, জিডিপিতে নারীর ভূমিকা ২০ শতাংশ যা মাত্র ১৩ থেকে ২২ শতাংশের হিসাব। বাকি ৭৮ থেকে ৮৭ শতাংশ কাজের বিনিময় মূল্য না থাকায় ওই কাজের হিসাব জিডিপিতে যোগ হয় না। তা যোগ করা হলে জিডিপিতে নারীর অবদান হতো পুরুষের সমান।
এদিকে, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাটে বেসরকারি সংস্থা এ্যাকশন এইড বাংলাদেশ পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, নারীরা ৪ দশমিক ৬ শূন্য ঘন্টা গৃহস্থালির কাজে সময় ব্যয় করলেও সেখানে পুরুষ কাজ করেন মাত্র ১ দশমিক ১ সাত ঘন্টা।
এ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন,কাঠামোগত,নীতিগত সুযোগ সুবিধার জায়গা থেকে বিনিয়োগের জায়গা থেকে আমাদের মাথায় থাকতে হবে যে আমরা নারীর কাজকে মূল্যায়ন করবো এবং স্বীকৃতি দিব।
অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতিতে শ্রমশক্তি জরিপের মাধ্যমে সরকার নারীর গৃহস্থালির সেবামুলক কাজের মূল্যায়ন করতে পারে।
তবে নারীর এই কাজকে মূল্যায়িতক করে জাতীয় আয়ে যোগ করার উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমরা স্বীকার করি এটা গুরুত্বপুর্ন কাজ। আমার ধারণা অতি শীঘ্রই এটি খাত হিসেবে স্বীকৃতি পাবে।আমি আমার অবস্থান থেকে সহায়তা করবো। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।