হিলি দিয়ে আসছে ভারতীয় পেঁয়াজ

Spread the love

বার্তাবহ চাঁদপুর নিউজ: দিনাজপুরের হিলি সীমান্তে আটকে থাকা পেঁয়াজের চালান অবশেষে বাংলাদেশে পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে ভারত সরকার। ভারতের নয়াদিল্লিতে বৈঠক শেষে গতকাল শুক্রবার রাতে দেশটির ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ফলে আজ শনিবার থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হচ্ছে। বার্তা সংস্থা ইউএনবি এ খবর জানিয়েছে।

শনিবার হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশিদ বলেন, ‘ভারত থেকে শুধু ১৪ সেপ্টেম্বরের আগে এলসি করা পেঁয়াজগুলো রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সেখানকার ব্যবসায়ীরা আমাদের জানিয়েছেন। এর ফলে আজ থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে দেশে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হচ্ছে।’ আমদানি করা এ পেঁয়াজ দেশে এলে বাজারে নিত্যপণ্যটির দাম অনেকটা কমে আসবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

হারুন উর রশিদ আরো বলেন, ‘১৪ সেপ্টেম্বরের পর যেসব পেঁয়াজের এলসি করা হয়েছে, সেসব পেঁয়াজও রপ্তানি করার জন্য ভারতের ব্যবসায়ীদের কাছে দাবি জানিয়েছি। তাঁরা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন।’

গত ১৪ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার অভ্যন্তরীণ বাজারে সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। এর ফলে পেঁয়াজবোঝাই সহস্রাধিক ভারতীয় ট্রাক দেশটির বিভিন্ন স্থলবন্দরে আটকা পড়ে। ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি না হওয়ায় দেশে বাজারগুলোতে দামে বড় ধরনের প্রভাব পড়ে। এতে করে ৪০ টাকার পেঁয়াজ একলাফে ১০০ টাকা ও এর বেশি দরে বেচাকেনা হয়।

এদিকে, এর আগে বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য ভারতীয় সীমান্তে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকভর্তি পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। ফলে বাধ্য হয়ে পচে যাওয়া পেঁয়াজ রাস্তায় ফেলে দিতে হয় রপ্তানিকারকদের। অনেকে কম দামে স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করে দেয়।

টানা গরমের মধ্যে গত সোমবার বা তারও আগে থেকে পেঁয়াজ নিয়ে সীমান্তের স্থলবন্দরগুলোতে দাঁড়িয়ে আছে ট্রাকগুলো। এরও এক সপ্তাহ আগে পেঁয়াজগুলো ভারতের মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে বস্তায় ভরা হয়। ১১ দিনের বেশি সময় ধরে পেঁয়াজ বস্তায় থাকায় পচন শুরু হয়েছে।

তাই বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীরা ট্রাকে নষ্ট হতে বসা পেঁয়াজ সীমান্তের কাছাকাছি পাইকারি বাজারে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে অবস্থিত বসিরহাটের ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দরে ট্রাক আটকে থাকে। তাই নষ্ট হতে বসা পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা স্থানীয় পাইকারি বাজারে কমদামে বিক্রি করে কিছুটা ক্ষতি সামাল দেন।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম স্থলবন্দর পেট্রাপোলের আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানিয়েছিলেন, পেট্রাপোল সীমান্তে পেঁয়াজভর্তি বহু ট্রাক দাঁড়িয়ে রয়েছে। যার মধ্যে অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হতে শুরু করে। গত সোমবার ভারত সরকারের তরফে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির আগেই বিভিন্ন স্থলবন্দরে পৌঁছে যায় পেঁয়াজভর্তি বহু ট্রাক। ওই দিন সকালে কিছু ট্রাক বাংলাদেশে ঢুকলেও দুপুরের পর থেকে আর পেঁয়াজভর্তি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। ভারতের বিভিন্ন স্থলবন্দরে আনুমানিক ২০ হাজার টন পেঁয়াজভর্তি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে।

এর আগে ভারতের অল ইন্ডিয়া কৃষাণ সভার সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ নাভালে জানান, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে মোটেই খুশি নন কৃষকেরাও। বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিয়ে শুধু ব্যবসায়ীদের নয়, কৃষকদেরও দুরবস্থার মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে।

এদিকে মহারাষ্ট্র সরকারের শরিক দল ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টি- এনসিপির প্রেসিডেন্ট শারদ পাওয়ার অবিলম্বে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযুষ গোয়েলের কাছে দাবি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *