অভিভাবকদের দৃষ্টিভঙ্গি

জেবুন্নেছা সুলতানা, সংগঠন কর্মী।।আমার স্কুলে আজ বার্ষিক খেলা।আমার ভেতরে আজ অন্যরকম অনুভুতি কাজ করছে কারন আমি৷ দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করতে যাচ্ছি। আমরা মোট ২০ জন এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিব। প্রথম তিন জন পুরুস্কার পাবে,আমার মনে হচ্ছে আমি সেই ভাগ্যবানদের একজন হবো।আমার বাবা, মা বিকেলে খেলার ছলে আমাকে এক’দিন প্রেকটিস করাচ্ছিলেন।তাই আমি বিজয়ী হবো মনে করছি।
বিকেল ৪টা আমরা সকল প্রতিযোগী যার যার চিহ্নিত স্থানে দাড়ালাম। একবার বাবা আর মাকে দেখলাম মনে হচ্ছে উনারা ভেবে৷ নিয়েছেন আমি পুরুস্কার পাব বলেই মনে করছেন আর আমাকে অভয় দিচ্ছেন। আমার বুকের ভেতরটা কেমন৷ জানি করছে।চোখ দুটো বন্ধ করে নিজেকে শ্বান্ত রাখার চেষ্টা করলাম।মাইকে৷ যথারীতি প্রতিযোগিতার নিয়ম ওপুরুস্কার পাবার৷ নিয়ম বলা হলো।
বাশীতে শিষ বাজার সাথে সাথে শুরু হলো দৌড় জোড়ে আর জোড়ে সাথে করতালির শব্দ কানে৷ আসছিল।আমি আপ্রাণ দৌড়াচ্ছি কিন্তু৷ আমি দেখলাম আমার সামনে আরও ৬/৭ জন।।বুঝলাম আমার দ্বারা হবে না তারপর চোখ বন্ধ করে সর্বশক্তি
প্রয়োগ করলাম।
কেউ একজন আমাকে ধরাতে চোখ খুললাম।বুঝতে চেষ্টা করলাম আমি কি প্রথম তিন জনের একজন হতে পেরেছি কি না।না পারিনি,আমি৷ মন খারাপ করে বাবার৷ কাছে যেতেই বাবা আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন আজ পার্টি হবে তুমি পেরেছ।আমি বললাম,,না বাবা আমি পারিনি ওরা তিনজন আমার৷ সাামনে ছিল, আমি চতুর্থ হয়েছি।
বাবা বলেন, তোমার সামনের তিনজনকে বাদ দিয়ে তোমার পেছনে কতজন ছিল তা৷ কি৷ তুমি জান? তোমার পেছনে ১৬জন ছিল আর আমি যদি ১৭জন প্রতিযোগি৷ মনে৷ করি তবে তুমি৷ ফার্স্ট।
তাহলে আমি তো পুরুস্কার পাব না।কে বলল পাবে৷ না?বাবা৷ বললেন এবছর৷ আমার কাছ থেকেই নিও।আগামী বছর ১৮জনকে পেছনে ফেলার চেষ্টা করলে অবশ্যই স্কুলের পুরুস্কার পেয়ে যাবে।
আসলে বাবা যেকথা বললেন, সেটাতো আমি চিন্তাা করিনি।
আমার বাবা অনেক ভাল।আমার পেছনে যারা ছিল সবার বাবারাই ওদেরকে এভাবে কেউ স্বান্তনা দেন নি।
আমরা যারা অভিভাবক সন্তানদেরকে নিয়ে যে প্রতিযোগিতা করি তা সন্তানদের মনে আঘাত পায়।তারা সব কিছুতেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।তাই সকল অভিভাবকরা সন্তানদের কে সর্বক্ষেত্রে হাসি খুশির মাধ্যমে পারিবারিক, সামাজিক, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করি।
লেখকের ইমেইলঃ sjsultana007@gmail.com