এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ধর্ষণ: পাঁচ দিনে ৯ আসামীর ৮ জন গ্রেফতার
বার্তাবহ চাঁদপুর ডেস্ক: সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি গতকাল মঙ্গলবার বিকাল ৫ টায় এমসি কলেজ ছাত্রাবাস এলাকা ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
ক্যাম্পাস, ছাত্রাবাস ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে প্রেস ব্রিফিং করে তদন্ত কমিটি। পরে ব্রিফিংয়ে টিম প্রধান মো. শাহেদুল খবীর চৌধুরী ভিকটিম, পরিবার ও তার স্বজনদের প্রতি সমবেদনা এবং দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এমসি কলেজ দেশের শীর্ষ একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই কলেজের ছাত্রাবাসে ধর্ষণের ঘটনায় সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। আমরা মনে করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে জড়িতদের একটি দৃষ্টান্তমূলক সাজা হবে।
করোনার সময়ে এ ধরনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত জানিয়ে তিনি বলেন, ঘটনার সময়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে হোস্টেল (ছাত্রাবাস) ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, কলেজ কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় কিভাবে রেসপন্স করেছে সে জায়গায় কোন ত্রুটি আছে কি-না তাও খতিয়ে দেখা হবে।
সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হোস্টেল বন্ধের সময়ে এমসি কলেজ হোস্টেল খোলা কেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবে মাত্র সিলেট এসেছি। সবকিছু খোঁজ নিচ্ছি। আগামী ৩ দিনের মধ্যে প্রাথমিক ও ৭ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্টদের কাছে জমা দেবেন বলে জানান তিনি।
এর আগে সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যদের এ কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সিলেট অঞ্চলের উপ পরিচালককে (কলেজ) সদস্য এবং মাউশির সহকারী পরিচালককে (কলেজ-১) কমিটিতে সদস্য সচিব করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে সম্প্রতি সংঘটিত ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনায় কোনোরূপ ঘাটতি ছিল কিনা তা সরেজমিন তদন্ত করে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার দায়-দায়িত্ব নিরূপণ করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দিতে হবে।
৫ম দিনেও প্রতিবাদ ক্ষোভ অব্যাহত
সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণ ঘটনায় সিলেটে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে। গত শুক্রবার রাতে ছাত্রাবাসে ন্যক্কারজনক ঘটনার পর থেকে সিলেট ফুসে উঠে। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন রাস্তায় নেমে আসে। মঙ্গলবারও নগরীর বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড,মহানগর যুবদল, একঝাঁক নারীদের সমন্বয়ে ও নারী উদ্যোক্তা ব্যবসায়ী জিন্নাত লিসার উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বলেছেন, ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত প্রয়োজন।
এদিকে নগরী ছাড়া সিলেটে বিভাগের বিভিন্ন উপজেলায় প্রতিবাদ সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে। সবার একই বক্তব্য: এবারই সিলেটের শিক্ষাঙ্গন থেকে আগাছা উপড়ে ফেলা দরকার। একই সাথে ধর্ষক ও ধর্ষণকারীদের প্রশ্রয়দাতাদেরও আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন বলে দাবি জানানো হয়।