চীনকে রুখতে মিয়ানমারে তেল পরিশোধনাগার নির্মাণের প্রস্তাব ভারতের

Spread the love

বার্তাবহ চাঁদপুর ডেস্ক: মিয়ানমারের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি খাতে ক্রমাগতই বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে চীন। আর চীনের এই বিনিয়োগ ঠেকাতে এবার মিয়ানমারে ৬০০ কোটি ডলার (প্রায় ৫০ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা) ব্যয়ে একটি পেট্রোলিয়াম পরিশোধনাগার নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে ভারত।

সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা ও সেনাপ্রধান এমএম নারাভানের মিয়ানমার সফরকালে একটি পেট্রোলিয়াম পরিশোধনাগার নির্মাণের সম্ভাবনা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। ঐ বৈঠকেই ভারতের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়। এই সফরে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সুচি ও সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করেন তারা। এ সময় করোনা মোকাবেলায় সহযোগিতা করতে সু চির হাতে ৩ হাজার ভায়াল রেমডেসিভির ভারতের পক্ষ থেকে তুলে দেয়া হয়।

ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ইয়াঙ্গুনের নিকটবর্তী থানলিনে জ্বালানি তেল পরিশোধনাগারটি নির্মাণের প্রস্তাব ভারতের পক্ষ থেকেই উত্থাপন করা হয়েছে। ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন লিমিটেড (আইওসিএল) প্রকল্পটিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ প্রকল্প থেকে উভয় দেশই লাভবান হতে পারে।

জানা গেছে, মিয়ানমারের জ্বালানি খাতে বিদেশী বিনিয়োগের ৭০ শতাংশেরই যোগান দেয় চীন। মিয়ানমারে জ্বালানি তেল পরিশোধনাগারের সংখ্যাও খুবই অপর্যাপ্ত এবং দেশটির স্থানীয় জ্বালানি চাহিদার বড় একটি অংশই আমদানিনির্ভর।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সীমান্তে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা নিয়েও দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয় বলে ভারত সরকারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। বৈঠকে উভয় দেশের পক্ষ থেকেই নিজ নিজ এলাকায় অন্য দেশের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচিত কর্মকাণ্ড হতে না দেয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

এ সময় মিয়ানমারের ২২ বিদ্রোহী ভারতীয়কে নয়াদিল্লির কাছে হস্তান্তরের সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে বক্তব্য রাখে ভারত।

এছাড়া ভারতের পক্ষ থেকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে যুদ্ধবিধ্বস্ত রাখাইন অঞ্চলে দ্রুত স্থিতিশীলতা ফেরাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করা হয়।

ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানিয়েছে, রাখাইনে কৃষি উত্পাদন বাড়াতে কৃষি যন্ত্রপাতি ও উপকরণ ব্যবহারের কার্যকারিতা ও দক্ষতা বাড়ানোর উদ্দেশ্য থেকে রাখাইন স্টেট ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (আরএসডিপি) চুক্তিকে আরো এগিয়ে নিতে কাজ করছে ভারত ও মিয়ানমার।

এ সময় ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যেকার সমঝোতার আলোকে রাখাইনে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের নিরাপদ, টেকসই ও দ্রুত প্রত্যাবাসনের পক্ষে নিজস্ব অবস্থান পুনরায় ব্যক্ত করা হয়।

ভারত সরকারের সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানান, বছরে ৫০ লাখ ডলার অনুদানের মাধ্যমে রাখাইনে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কৃষি প্রকল্পসহ এখানকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহযোগিতা করবে ভারত। এছাড়া এ সফরে মিজোরাম ও মিয়ানমারের মধ্যে অর্থনৈতিক যোগাযোগ উন্নত করার লক্ষ্যে চিন প্রদেশের বিয়ানিউ সীমান্তহাট সেতু নির্মাণের জন্য ২০ লাখ ডলার অনুদানেরও ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *