বিপন্ন প্রজাতির মৃ’ত ডলফিন হালদায় ফের ভেসে উঠল

Spread the love

বার্তাবহ চাঁদপুর ডেস্ক: দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ড্রেজার ও বাসা জালে আ’ট’কা পড়ে এবার মা’রা গেল বিপন্ন প্রজাতির আরেকটি ডলফিন।

গতকাল ১৩ অক্টোবর, মঙ্গলবার রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে কাগতিয়া আজিমের ঘাট এলাকাস্থ হালদা নদীর পাশ থেকে এ মৃ’ত ডলফিনটি উ’দ্ধা’র করে এলাকাবাসী।

পশ্চিম গুজরা ইউপি চেয়ারম্যান লায়ন সাহাবুদ্দিন আরিফ বলেন, মৃ’ত ডলফিনটি নদীতে ভাসতে দেখে এলাকাবাসী আমাকে খবর দেয়। পরে আমি উপজেলা প্রশাসনকে ঘটনাটি জানায়।

এতে ভারপ্রাপ্ত রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, নগরীর ষোলশহরস্থ চট্টগ্রাম বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন, শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল কুদ্দুসসহ মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তাদের উপস্থিত হয়।

পরে রাত ৯টার সময় নদী থেকে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ডলফিনটিকে নদী থেকে উদ্ধার করে তীরে আনা হয়। তিনি জানান, ডলফিনটির দেহে আ’ঘা’তের চিহ্ন ও লেজে বাসা জাল পাওয়া যায়।

তাই ধারণা করা হচ্ছে নদীতে বাসা জালে আটকার পর হয়তো নদীতে চলাচল করা বালুবাহী নৌযান বা ইঞ্জিনচালিত নৌকার প্রপেলারের (পানির নিচে থাকা ইঞ্জিনের সঙ্গে যুক্ত পাখা) আঘাতে ২/৩ দিন আগে ডলফিনটির মৃ’ত্যু হয়েছে।

ডলফিনটি লম্বায় সাড়ে চার ফুট। ওজন ৪০ কেজি। লম্বা ৪৮ ইঞ্চি। এটিকে অর্ধ গলিত উদ্ধার করার পর রাত সাড়ে ৯টার সময় গর্ত করে পুতে ফেলা হয়।

হালদায় যে ডলফিন দেখা যায়, তা স্থানীয়ভাবে উতোম বা শুশুক নামে পরিচিত। মিঠাপানির স্তন্যপায়ী এই প্রাণী গেঞ্জেস বা গাঙ্গেয় ডলফিন। সাধারণত দূষ’ণমুক্ত পরিষ্কার পানিতে এটি বিচরণ করে।

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ছত্তার খালের মুখ থেকে হাটহাজারী উপজেলার মদুনাঘাট পর্যন্ত নদীর প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা ডলফিনের মূল বিচরণক্ষেত্র।

মঙ্গলবার যে জায়গায় ডলফিনটি ভেসে ওঠে তা মদুনাঘাট থেকে ২-৩ কিলোমিটার দুরে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আজ পর্যন্ত ২৬টি ডলফিন মা’রা গেছে। এর মধ্যে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি মা’রা গিয়েছিল।

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) ডলফিনের এই প্রজাতিটিকে অতি বিপন্ন (লাল তালিকাভুক্ত) হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

হালদা দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র। সরকার ২০১০ সালে চট্টগ্রামের নাজিরহাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত নদীর প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকাকে জলজ প্রাণীর অভয়ারণ্য ঘোষণা করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *